অমৃত

আসল কথাটা হচ্ছে ‘‘আমি তোমায় চাই’’ এই জিনিসটা – এই ইচ্ছাটাই হচ্ছে সাধনার প্রাণ। এইটা না খাকলে সব সাধনাই শব সাধনা। আর এইটে থাকলে আর কিছু ঢং ঢং না থাকলেও চলে।

এই চাওয়াটা কি একদিনে খুব হয়? প্রথম প্রথম জগতের যেমন দশটা জিনিস চাই – খাওয়া পরা সুখ স্বচ্ছন্দতা কামিনী কাঞ্চন ইত্যাদি –

তেমনি ‘‘তাঁকে চাও।’’ আরে শত শত জিনিস যেমন দরকার, তেমন ভগবানও একটা দরকার। তার বেশী তো আর তোদের ক’রতে বলিনি। এটা চাই ওটা চাই, তেমনি মা তোমায়ও চাই। এইটুকু যদি করতে পার, দশটার মধ্যে একটা ক’রে মনের এক কোণে একটু স্থান দিতে পার, তবে আর কোন ভয় নাই।

তিনি আমার ‘কৃষ্ণ’ কিনা, আকর্ষণই হচ্ছে তাঁর স্বভাব। ক্রমে দেখবে যে টানছেন। সেদিক্‌কার টান যত বাড়্‌বে, অন্যদিক্‌কার টান তত কমে আস্‌বে।

ঠিক ঠিক চাওয়া তখন থেকে আরম্ভ ক’র্‌বে।

‘‘ভগবান্‌ কোথায় তুমি? একবার এসে দেখা দাও।’’ এমন তর অনুসন্ধানের ভাবটা খুব ভল নয়। গীতা কিন্তু তা বলে না, উপনিষৎ ও তা বলে না।

‘‘এই যে তুমি, এই যে তোমায় পেলুম, এই তোমায় সত্যই ধ’রলুম’’ এই ভাবে সর্ব্বত্র তাঁকে দেখ্‌তে আরম্ভ কর্‌লেই ঠিক তাঁকে ধরা যায়।

ওরে মিথ্যাবাদী রাখাল বালকের মত মিথ্যা ক’রে বল্‌বি – ‘‘এই মা তোমায় পেয়েছি।’’ জোর ক’রে ব’ল্‌বি, সত্যি ক’রে বল্‌বি, তা কে জানে কাঠ, কে জানে পাথর। এম্‌নি কিছুদিন কর্‌ দেখি – দেখ্‌বি সত্য সত্যই একদিন বাঘ আসিয়া পালের গরু মেরে ফেল্‌বে। শেষে তোমারও ঘাড় ভাঙ্গিয়া ফেলিবে, তখন সবই মাতৃময় দেখ্‌বে। সবই মা করছেন বুঝতে পার্‌বে।