যা যা নাম দিগে যা
পুরীতে ১৩৪৩ সালে ১৩ই চৈত্র দোল পূর্ণিমার দিন প্রথম নাম প্রচার আরম্ভ করা হ’ল। সঙ্গে শ্রীনারায়ণ, হাবু বা পরমানন্দ, অনাথ (থৈপাড়া) জগবন্ধু (অনাথের দাদা) ও শ্রীগৌর (আদিত্যদাদার পুত্র) দল ভাড়া করা হয়েছিল। বাংলাতেও ঐ দিন নাম প্রাচারের কথা বলে গিয়েছিলাম। বটু, ক্ষিতিশ, নিতাই প্রভৃতি নাম প্রচার আরম্ভ করে। প্রচারের পর ছেলেরা চলে আসে। সঙ্গে নারায়ণ থাকে। স্বর্গদ্বারে স্বর্গধামে ঘর ভাড়া নিয়ে, মরণ পণে মহাবিষ্ণুব সংক্রান্তির দিন মৌন গ্রহণ করি। স্বপ্নে বাণীতে বল্লে হবে না, যদি সত্যই এটাকে দিয়ে নাম প্রচার করাতে হয় ত দেখা দিয়ে বল্তে হবে।
নারায়ণকে ব’লে বসেছিলাম প্রথম সপ্তাহ হবিষ্য, দ্বিতীয় সপ্তাহ ফল দুধ, তৃতীয় সপ্তাহ শুধু দুধ এইভাবে আহারের ব্যবস্থা কর্বে।
সাধন রাজ্যে মাত্র নাদই দক্ষিণে আছেন। ওঁকার পর্য্যন্ত উচ্চারণ করবার শক্তি নাই। বৈকালে সমুদ্রতীরে গিয়ে সমুদ্র দেখ্তাম্।
চল্লো এইভাবে ধ্যান। একাদশীর দিন রাত্রে নারায়ণকে লিখে জানিয়ে জগন্নাথের রাজবেশ দেখ্তে গেলাম। পাশের ঘরে ভাড়াটে আসে গোলমাল হয়। নারয়ণকে জানাই ধ্যান কর্বার জন্য কোন গাছ তলার সন্ধান কর্তে। ৯ই কি ১০ই বৈশাখ(১৩৪৪) মধ্যরাত্রে বহির্বাসাদি পরিবর্ত্তন ক’রে ধ্যান কর্তে লাগলাম।
ছোট ছেলে নুপূর পায়ে দিয়ে নাচ্লে যেমন শব্দ হয়, সেরূপ নাদ দক্ষিণদিকে মাথায় চলছে। বসে বসে এমন বস্বার জায়গার অবস্থা যে, বস্বার ক্ষমতা নাই, শুয়ে পড়্লুম। নাদ চল্ছে ধীরে ধীরে জ্ঞান লোপ হ’য়ে আস্ছে, বেশ বুঝতে পার্ছি জ্ঞান লোপ হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে এক গোলাকার জ্যোতির আবির্ভাব হ’ল। জ্যোতির মধ্যে বামদিক থেকে শ্রীশ্রীজগন্নাথ দেব এসে হাত নেড়ে সহাস্যবদনে বল্লেন – ‘‘যা যা নাম দিগে যা।’’
ডানদিক দিয়ে অন্তর্হিত হ’লেন, সমস্ত শরীর রোমাঞ্চিত হ’ল, উঠে বস্লাম। একি একি সত্যই তুমি এসে বলে গেলে নাম দিবার কথা? চোখ কানকে কি করে অবিশ্বাস কর্বো, কেমন হ’য়ে গিয়ে চুপ্ করে বসে রইলাম। (এখন লিখছি শরীর রোমাঞ্চিত হ’চ্ছে)।