আরব যাবো তাতার যাবো

শ্রীশ্রীঠাকুর || প্রকাশ কাল - March 6 2018


বোধহয়, ১৩২৯ সাল, আশ্বিন মাস দুর্গপূজার পর ঠাকুরের নুউমোনিয়া হয়। তিনি দুদিন অজ্ঞান হ’য়ে থাকেন। তাঁকে বাতাস কচ্ছি, সেজদিদি আছেন – এমন সময় তাঁর জ্ঞান হয়। তিনি বলেন, আমি কদিন অজ্ঞান হ’য়ে আছি? প্রপন্ন বলে, দুদিন।
ঠাকুর বলেন এবার সব নুতন সব নুতন – এক অপূর্ব স্থানে গিছ্‌লাম। সেখানে সমস্ত মহাপুরুষ একত্রিত হয়েছেন, একটি সভার জন্য, সবাই এসেছেন। সভার উদ্দেশ্য হল – বর্ত্তমান সময়ে সমস্ত অধিকারী যাতে কাজ পায়, ভগবৎ প্রাপ্তির পথে অগ্রসর হ’তে পারে এরূপ একটি পথের স্মরণ করা। সভার কার্য্য আরম্ভ হল। একজন মহাপুরুষ বল্লেন, অহিংস হওয়া। মাত্র অহিংস হলে পরম পদ লাভের সম্ভাবনা নাই বলে বোধ হয় সকলে নীরব রইলেন। অপর মহাপুরুষ নিজের মত ও শাস্ত্র প্রমাণ দিতে লাগ্‌লেন। অন্য জনৈক মহাপুরুষ শাস্ত্র প্রমাণ সহ নিজের মত বল্‌লেন, এভাবে মহাপুরুষ গণের মত শুন্‌তে শুন্‌তে প্রথম দিনের অধিবেশন শেষ হ’ল, দ্বিতীয় দিনে মন্ডলাকারে উপবিষ্ট মহাপুরুষগণ স্ব স্ব মত শাস্ত্র প্রমাণ সহ বল্‌তে লাগ্‌লেন। অনন্তর (ঠাকুর বল্লেন) যখন আমার পর্য্যায় এল তখন আমি শাস্ত্র প্রমাণ সহ – হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।। এই মহামন্ত্র বল্‌লাম। তখন তাঁরা সকলে হরি ওঁ হরি ওঁ বলে আমার মত সমর্থন কল্লেন। সভা ভেঙ্গে গেল আমারও বাহ্য চৈতন্য ফিরে এল।
প্রপন্ন বরে এই ঘটনাটি একখানি ছোট খাতায় লিখে রাখে।
ক্রমে ঠাকুর সুস্থ হয়ে উঠ্‌লেন্‌। তিনি বল্‌তেন, নাম প্রচার ক’রবো। লোকের দ্বারে দ্বারে যাব। আরব যাবো তাতার যাবো মুসলমান পর্য্যন্ত এনাম গ্রহণ করবে। সে কি তাঁর অদম্য উৎসাহ!
তাঁর প্রিতিষ্ঠিত দিগ্‌সুই সাধন সমিতিতে তিনি সন্ধ্যার পর সন্ধ্যাহ্নিক করে গিয়ে হরে কৃষ্ণ নাম কীর্ত্তন কর্‌তেন। সঙ্গে প্রপন্ন প্রভৃতি থাক্‌তো। এভাবে নাম গোলোক থেকে অবতরণ করে দিগ্‌সুই মহাপীঠে প্রথমে আত্মপ্রকাশ কর্‌লেন। তখন কেহ অনুমানও কর্‌তে পারেন নাই যে, এই মহামন্ত্র একদিন প্রায় সারা ভারতে মহাতরঙ্গ তুলবে। চল্‌তে লাগ্‌ল নাম ধীরে ধীরে।